আরও দেখুন
বুধবার দিনের বেশিরভাগ সময় GBP/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে, যা কিছুটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি। দিনের শুরুতে যুক্তরাজ্যে মুদ্রাস্ফীতি সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, যেখানে ডিসেম্বর মাসে মুদ্রাস্ফীতি হ্রাসের ইঙ্গিত পাওয়া যায়। এটি নির্দেশ করে যে ব্যাংক অফ ইংল্যান্ড (BoE) আরও অধিক ডোভিশ বা নমনীয় অবস্থান গ্রহণ করতে পারে, যা ব্রিটিশ মুদ্রার জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করে এবং সম্ভাব্য দরপতনের পূর্বাভাস দেয়। তবুও, প্রায় সন্ধ্যা পর্যন্ত পাউন্ডের মূল্য বৃদ্ধি পেতে থাকে। মার্কিন মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন প্রকাশের পরেও পাউন্ডের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত থাকে, যদিও এই প্রতিবেদনের ফলাফল ডলারের দরপতনের কোনো ইঙ্গিত দেয়নি। তবে, সন্ধ্যা নাগাদ মার্কেটের ট্রেডাররা পাউন্ডের এই মূল্য বৃদ্ধি ধরে রাখতে ব্যর্থ হয় এবং নতুন করে পাউন্ড বিক্রির প্রবণতা ফিরে আসে, যা পূর্বের দর বৃদ্ধির তুলনায় বেশি ধারাবাহিক মনে হয়।
আমরা প্রায় এক বছর ধরে বলছি যে পাউন্ডের কেবল দরপতন হওয়া উচিত, এবং এখন পর্যন্ত এই পূর্বাভাস ১০০% সঠিক প্রমাণিত হয়েছে। আমরা এখনো মধ্যমেয়াদে পাউন্ডের মূল্য বৃদ্ধির কোনো কারণ দেখছি না এবং পাউন্ডের মূল্য অন্তত 1.1800-এ পৌঁছাবে বলে আশা করছি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদনগুলো একটি স্পষ্ট প্রবণতা নিশ্চিত করেছে: 2025 সালে ফেডারেল রিজার্ভ কেবলমাত্র ন্যূনতম মাত্রায় আর্থিক নীতিমালা নমনীয় করতে পারে, যেখানে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড অন্তত চারবার সুদের হার হ্রাস করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়াও, ফেডের আর্থিক নীতিমালার নমনীয়করণের বিষয়টি ইতোমধ্যেই মার্কেটে মূল্যায়িত হয়েছে, যা পাউন্ডের জন্য একটি হতাশাজনক পরিস্থিতির ইঙ্গিত দেয়।
বুধবারের ট্রেডিং সিগন্যাল খুব একটা সুবিধাজনক ছিল না। ইউরোপীয় সেশনে, মূল্য 1.2237 লেভেল থেকে রিবাউন্ড করে, তবে মূল্য মাত্র ২০ পিপস নিচে নেমে যায় এবং ব্রেকইভেনে স্টপ লস ট্রিগার হয়। এরপর, মূল 1.2237–1.2255 রেঞ্জ এবং কিজুন-সেন লাইনের উপরে উঠে, কিন্তু পরে মূল্য দ্রুত নিচে নেমে আসে। প্রথম সিগন্যালটি ভুল প্রমাণিত হয়, তবে শক্তিশালী নিম্নমুখী প্রবণতা চলাকালীন সময়ে এই পেয়ার ক্রয় করা সাধারণত ঝুঁকিপূর্ণ। দ্বিতীয় সিগন্যালটি বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবার আরও বিকশিত হতে পারে।
সর্বশেষ কমিটমেন্ট অব ট্রেডার্স (COT) রিপোর্ট অনুযায়ী, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাউন্ড স্টার্লিং নিয়ে কমার্শিয়াল ট্রেডারদের সেন্টিমেন্ট বারবার পরিবর্তিত হয়েছে। লাল এবং নীল লাইন, যা কমার্শিয়াল এবং নন-কমার্শিয়াল ট্রেডারদের নেট পজিশনের প্রতিনিধিত্ব করে, প্রায়শই একে অপরকে অতিক্রম করে এবং সাধারণত শূন্যের কাছাকাছি রয়েছে। বর্তমানে, এই লাইনগুলো কাছাকাছি রয়েছে, যা লং এবং শর্ট পজিশনের প্রায় সমান সংখ্যা নির্দেশ করে।
সাপ্তাহিক টাইমফ্রেমে, মূল্য প্রথমে 1.3154 লেভেল ব্রেক করে নিচের দিকে যায় এবং পরবর্তীতে আরও নিচে নেমে ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করে ফেলে। এই ব্রেক এই ইঙ্গিত দেয় যে, দীর্ঘমেয়াদে পাউন্ডের দরপতন অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
সর্বশেষ COT রিপোর্ট অনুযায়ী, নন-কমার্শিয়াল গ্রুপ 1,600 বাই কন্ট্রাক্ট এবং 100 সেল কন্ট্রাক্ট ক্লোজ করেছে, যার ফলে নেট পজিশনের সংখ্যা 1,500 কন্ট্রাক্টের বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে, এটি পাউন্ডের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা নির্দেশ করে না।
মৌলিক প্রেক্ষাপট অনুযায়ী দীর্ঘমেয়াদে পাউন্ড ক্রয়ের জন্য কোনো যৌক্তিকতা পাওয়া যাচ্ছে না। এর পরিবর্তে, পাউন্ড নতুন করে বৈশ্বিক নিম্নমুখী প্রবণতার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে বলে মনে হচ্ছে। এর ফলে, নেট পজিশনের সংখ্যা আরও হ্রাস পেতে পারে, যা পাউন্ডের চাহিদার আরও হ্রাস নির্দেশ করে।
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, GBP/USD পেয়ারের মূল্য বিয়ারিশ প্রবণতা প্রদর্শন করছে। পূর্বের কারেকশনের মতোই এই পেয়ারের মূল্যের যেকোন আসন্ন কারেকটিভ মুভমেন্ট সম্ভবত ক্ষণস্থায়ী হবে। বর্তমানে, মাঝে মাঝে টেকনিক্যাল কারেকশনের প্রয়োজনীয়তা ছাড়া পাউন্ডের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার প্রত্যাশা করার মতো কোনো মৌলিক কারণ নেই, প্রতিটি সপ্তাহেই এইরকম পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি হতে দেখা যাচ্ছে। মধ্যমেয়াদে, আমরা অনুমান করছি যে পাউন্ডের দরপতন অব্যাহত থাকবে।
১৬ জানুয়ারির জন্য, আমরা নিম্নলিখিত গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো তুলে ধরছি: 1.2052, 1.2109, 1.2237–1.2255, 1.2349, 1.2429–1.2445, 1.2511, 1.2605–1.2620, 1.2691–1.2701, 1.2796–1.2816 এবং 1.2863। এছাড়াও, সেনকৌ স্প্যান বি (1.2421) এবং কিজুন-সেন (1.2207) লাইনগুলোও গুরুত্বপূর্ণ সিগন্যাল প্রদান করতে পারে। মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ২০ পিপসের মুভমেন্ট প্রদর্শন পর ব্রেকইভেনে স্টপ লস অর্ডার সেট করা উচিত, যাতে ভুল সিগন্যালের কারণে সম্ভাব্য লোকসান থেকে সুরক্ষিত থাকা যায়। মনে রাখবেন যে ইচিমোকু সূচকের লাইনগুলো দিনের বেলা অবস্থান পরিবর্তন করতে পারে, যা ট্রেডিং সিগন্যাল সনাক্ত করার সময় বিবেচনা করা উচিত।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যে জিডিপি এবং শিল্প উৎপাদন সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে; তবে, এই প্রতিবেদনগুলোর প্রভাবে বর্তমান বাজার পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হবে বলে আশা করা হচ্ছে না। যুক্তরাষ্ট্রেও খুচরা বিক্রয় এবং জবলেস ক্লেইমস সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, তবে এগুলোও মার্কেটে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে বলে মনে হয় না।