empty
 
 
06.01.2025 07:49 AM
EUR/USD পেয়ারের সাপ্তাহিক পর্যালোচনা – ইউরোর জন্য নতুন পরীক্ষা অপেক্ষা করছে

This image is no longer relevant

বৃহস্পতিবারের তীব্র দরপতনের পরে শুক্রবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ার পুনরুদ্ধার করেছে। বৃহস্পতিবার ইউরোর মূল্য ১০০ পিপসের বেশি কমে গিয়েছিল, যদিও এর পেছনে কোনো সুস্পষ্ট কারণ ছিল না। এটি উল্লেখযোগ্য, কারণ সেই দিন সামষ্টিক অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে প্রায় তেমন কিছুই ছিল না। তবে, ইউরোর এমন দরপতন হওয়া মোটেও আশ্চর্যের বিষয় নয়। সামষ্টিক অর্থনীতি বা মৌলিক কারণ ছাড়াও এই পেয়ারের দরপতন, দর বৃদ্ধির, বা মূল্য স্থবির থাকতে পারে। সর্বদা এই পেয়ারের মূল্যের উপর কিছু বৈশ্বিক প্রভাব কাজ করে, যা নিয়ে আমরা প্রায়শই আলোচনা করি। এর অর্থ হলো, যদি কোনো বড় বৈশ্বিক কারণ সৃষ্টি হয়—যেমন কোনো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রানীতিতে সম্ভাব্য পরিবর্তন—তাহলে মার্কেটের ট্রেডাররা আগেই এর সম্ভাব্যতা মূল্যায়ন শুরু করতে পারে, এমনকি সেই পরিবর্তন কখনো বাস্তবে না ঘটলেও। যেমনটি বলা হয়ে থাকে, "গুজবের ভিত্তিতে কিনুন, বাস্তবতার ভিত্তিতে বিক্রি করুন," বা তার বিপরীত।

সুতরাং, ঘটনাটি হয়তো এখনো ঘটেনি—বা হয়তো কখনো ঘটবে না—কিন্তু যদি কোনো শক্তিশালী মৌলিক কারণ থাকে বা ইতোমধ্যেই সক্রিয় হয়, তাহলে মার্কেটে কয়েক সপ্তাহ বা মাস ধরে এই প্রভাব প্রতিফলিত হতে পারে। বৃহস্পতিবার যা দেখা গেছে, তা কেবল গত কয়েক মাস ধরে যা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে তারই একটি ধারাবাহিকতা: ইউরোর দরপতন। এই পতনের যথেষ্ট যৌক্তিক কারণ রয়েছে, যা পুরো ২০২৪ জুড়ে গড়ে উঠেছে, এবং আমরা এটি নিয়ে অনেকবার আলোচনা করেছি।

অবশ্যই, ইউরোর দরপতন চিরস্থায়ী হবে না, তবে হায়ার টাইমফ্রেমে টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস এই ইঙ্গিত দেয় যে এই পেয়ারের মূল্যের ১৬ বছর ধরে চলমান দীর্ঘমেয়াদী নিম্নমুখী প্রবণতা এখনো শেষ হয়নি। যদি তাই হয়, তাহলে মার্কেটে কেন কেউ আশা করবে যে ইউরোর মূল্য বৃদ্ধি পাবে, যখন এটির মূল্য ১৬ বছর ধরে কমছে? সামষ্টিক অর্থনৈতিক বিষয়গুলো কেবল এই পেয়ারের মূল্যের স্বল্পমেয়াদী মুভমেন্টকে প্রভাবিত করবে। উদাহরণস্বরূপ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দুর্বল অর্থনৈতিক প্রতিবেদন সাময়িকভাবে ডলারকে দুর্বল করতে পারে, কিন্তু এটি সামগ্রিক নিম্নমুখী প্রবণতাকে উল্টে দিতে পারবে না। বৈশ্বিক প্রবণতা এবং কারণগুলো বর্তমানে বেশ স্পষ্ট: ফেডারেল রিজার্ভ ইতোমধ্যেই সুদের হার কমাচ্ছে, তবে এটি ধীরগতিতে এবং অনিচ্ছাসত্ত্বে হচ্ছে। এদিকে, ট্রেডারদের প্রত্যাশার বিপরীতে, ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরও আক্রমণাত্মকভাবে মুদ্রানীতি নমনীয় করছে।

আসন্ন সপ্তাহে ইউরোপীয় ইউনিয়নে বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, তবে তা সংখ্যায় সীমিত। প্রধান আকর্ষণ হবে জার্মানি এবং ইউরোজোনের ডিসেম্বর মাসের মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন, পাশাপাশি খুচরা বিক্রি এবং বেকারত্বের হার সম্পর্কিত তুলনামূলক স্বল্প গুরুত্বসম্পন্ন প্রতিবেদন। অন্য প্রতিবেদনগুলো এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টে খুব বেশি প্রভাব ফেলবে না। মার্কিন সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের সম্ভবত বেশি আগ্রহ সৃষ্টি করবে, যা নিয়ে আমরা GBP/USD সংক্রান্ত নিবন্ধে আলোচনা করব। তবে, এই সপ্তাহে এমনকি মধ্যমেয়াদেও নিম্নমুখী প্রবণতা শেষ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। সর্বোচ্চ, ইউরোর মূল্যের একটি কারেকশনের আশা করা যেতে পারে।

This image is no longer relevant

৬ জানুয়ারি পর্যন্ত গত পাঁচ দিনের ট্রেডিংয়ে EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গড় ভোলাটিলিটি হচ্ছে ৮২ পিপস, যা "মাঝারি" হিসেবে বিবেচিত হয়। সোমবার আমরা আশা করছি যে এই পেয়ার 1.0227 থেকে 1.0391 এর মধ্যে ট্রেড করবে। আপার লিনিয়ার রিগ্রেশন চ্যানেলটি নিম্নমুখী প্রবণতা প্রদর্শন করছে, যা বৈশ্বিক পর্যায়ে এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতার ধারাবাহিকতাকে নির্দেশ করে। পাশাপাশি, CCI সূচকটি আবারও ওভারসোল্ড জোনে প্রবেশ করেছে এবং একটি নতুন বুলিশ ডাইভারজেন্স তৈরি করেছে। তবে, এই সিগন্যাল সর্বোচ্চ একটি সম্ভাব্য কারেকশনের ইঙ্গিত দেয়।

নিকটতম সাপোর্ট লেভেল:

  • S1 – 1.0254
  • S2 – 1.0132
  • S3 – 1.0010

নিকটতম রেজিস্ট্যান্স লেভেল:

  • R1 – 1.0376
  • R2 – 1.0498
  • R3 – 1.0620

ট্রেডিংয়ের পরামর্শ:

EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে, আমরা নিয়মিতভাবে মধ্যমেয়াদে ইউরোর দরপতনের প্রত্যাশার কথা উল্লেখ করেছি এবং সামগ্রিকভাবে এই পেয়ারের মূল্যের বিয়ারিশ প্রবণতার সম্ভাবনা দৃঢ়ভাবে সমর্থন করেছি, যা এখনো শেষ হতে অনেক দেরি রয়েছে বলে মনে হচ্ছে। ফেডারেল রিজার্ভের ভবিষ্যৎ সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা মার্কেটে ইতোমধ্যেই মূল্যায়িত হয়েছে যার ফলে মধ্যমেয়াদে ডলারের দুর্বল হওয়ার সম্ভাবনা কম।

যতক্ষণ মূল্য মুভিং অ্যাভারেজের নিচে থাকে ততক্ষণ শর্ট পজিশন প্রাসঙ্গিক থাকবে, যার লক্ষ্যমাত্রা 1.0254 এবং 1.0227 এর লেভেল। যদি আপনি "শুধুমাত্র" টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ ব্যবহার করে ট্রেড করেন, যদি মূল্য মুভিং অ্যাভারেজের উপরে যায় তাহলে লং পজিশনের কথা বিবেচনা করা যেতে পারে এবং এক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হবে 1.0498। তবে, বর্তমান পরিস্থিতিতে এই পেয়ারের মূল্যের যেকোনো ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টকে একটি কারেকশন হিসেবে দেখা উচিত।

চিত্রের ব্যাখা:

  • লিনিয়ার রিগ্রেশন চ্যানেল - বর্তমান প্রবণতা নির্ধারণ করতে সাহায্য করে। যদি উভয়ই একই দিকে পরিচালিত হয়, তাহলে এর অর্থ হল বর্তমানে প্রবণতা শক্তিশালী।
  • মুভিং এভারেজ লাইন (সেটিংস 20.0, স্মুথেদ) – স্বল্পমেয়াদী প্রবণতা এবং বর্তমানে কোন দিকে ট্রেডিং করা উচিত তা নির্ধারণ করে।
  • মারে লেভেল - মুভমেন্ট এবং কারেকশনের লক্ষ্য মাত্রা।
  • অস্থিরতার মাত্রা (লাল লাইন) - সম্ভাব্য প্রাইস চ্যানেল যেখানে এই পেয়ারের মূল্য পরের দিন অবস্থান করবে, যা বর্তমান অস্থিরতা সূচকের উপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হয়।
  • সিসিআই সূচক – এই সূচকের ওভারসোল্ড জোনে (-250-এর নীচে) বা ওভারবট জোনে (+250-এর উপরে) প্রবেশের মানে হল যে চলমান প্রবণতা বিপরীতমুখী হতে যাচ্ছে।
এখন কথা বলতে পারবেন না?
আপনার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন চ্যাট.